Synchronous ICT Book

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং:

         জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং হচ্ছে জীববিদ্যার একটি প্রয়োগমুখী শাখা। প্রাণী বা উদ্ভিদের ক্ষুদ্রতম একক হলো কোষ। কোষের ভিতরে থাকে নিউক্লিয়াস, নিউক্লিয়াসের ভিতর কিছু সুক্ষ্ণ পেচানো বস্তু ক্রোমোজোম থাকে, এই ক্রোমোজোমের মাঝে পেচানো চেইনের মত কিছু অতি সুক্ষ্ণ বস্তু থাকে যাকে DNA (Deoxyribo Nucleic Acid) বলা হয়। বায়োটেকনোলজি ব্যবহার করে কোনো জীব কোষ থেকে কোনো সুনির্দিষ্ট জিন বের করে অন্য কোনো জীব কোষে স্থাপন ও কর্মক্ষম করা বা নতুন বৈশিষ্ট্য সৃষ্টির জন্য কোনো জীবের ডিএনএ-তে পরিবর্তন ঘটানোকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বা জিন প্রকৌশল বলে। সায়েন্স ফিকশন লেখক জ্যাক উইলিয়ামসন ১৯৫১ সালে তার লেখা Dragon’s Island এ সর্বপ্রথম জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়টি উল্লেখ করেন। কোনো জীব থেকে রেসট্রিকশন এনজাইম বা আনবিক কাঁচির সাহায্যে DNA-কে কেটে নিয়ে অন্য কোনো কোষের DNA-তে স্থাপন করে যে নতুন DNA সৃষ্টি হয় তাকে Recombinant DNA বলে। ১৯৭২ সালে Paul Berg বানরের ভাইরাস SV40 ও lambda virus এর DNA এর সংযোগ ঘটিয়ে বিশ্বের প্রথম রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ অণু তৈরি করেন। এই জন্য Paul Berg কে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর জনক বলা হয়।

রিকম্বিনেন্ট DNA প্রস্তুত করার ধাপ সমুহঃ

১। DNA নির্বাচন।

২। একটি বাহক নির্বাচন, যে DNA খন্ডটি প্রতিস্থাপন করবে।

৩। রেসট্রিকশন এনজাইম বা আনবিক কাঁচির নির্বাচন যা DNA নির্দিষ্ট স্থানে ছেদন করবে।

৪। ছেদনকৃত খন্ডসমূহকে সংযুক্ত করার জন্য DNA লাইগেজ এনজাইম দ্বারা জোড়া লাগানো ।

৫। DNA অনুলিপনের জন্য একটি পোষক নির্বাচন।(যেমন-E.coli)।

৬। DNA খণ্ড সমম্বয়ে প্রস্তুতকৃত রিকম্বিনেন্ট DNA-এর বহিঃপ্রকাশ মূল্যায়ন।

৭। জিনবাহী প্লাজমিড রিকম্বিনেন্ট DNA-এর সাহয্যে সংখ্যা বৃদ্ধি।

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ব্যবহারঃ

১। ইনসুলিন উৎপাদন জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-এর সবচেয়ে বড় সুফল। যা ডায়াবেটিস রোগীর চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।

২। শস্যের গুণাগুণ মান বৃদ্ধিতে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ব্যবহার রয়েছে।

৩। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর সাহায্যে এক ধরনের শস্যে থেকে সম্পূর্ণ নতুন ধরনের শস্যে উৎপাদন করা হচ্ছে।

৪। বিভিন্ন ধরণের রোগের চিকিৎসায় জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহার করা। রোগাক্রান্ত জিনে থেরাপি দিয়ে সারিয়ে তোলা হচ্ছে।

৫। ওষুধ তৈরিতে এখন জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ব্যবহার আছে।

৬। হরমোন তৈরিতেও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ব্যবহার আছে।

৭। মাছের জিন পরিবর্তন করে উন্নত জাতের মাছ চাষ করা হচ্ছে।

৮। টিকা তৈরিতে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ব্যবহার আছে।

৯। পরিবেশ উপযোগী শস্য উৎপাদন, যেন বিভিন্ন ধরণের হুমকি থেকে শস্য রক্ষা পায়।

১০। শস্যের উৎপাদন বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো।

১১। জেনেটিক ত্রুটি সমূহ নির্ণয় এর কাজে ব্যবহার করা হয়।

১২। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও সুরক্ষায় ।

Loading

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shopping Cart